অমি রহমান পিয়াল
(কানসাটের বিদ্রোহী শহীদ এক ১২ বছরের কিশোরের স্মৃতিতে)
মা'রে, তোরে দিনমান জ্বালাইছি খুব
তোর পাতের ভাগ খাওয়াবি বইলা 'আনুরে...'
ডাকটা ডাইনে-বামের সবাইর শোনা।
তারপর চোর-পুলিশ খেলা-তুই আর আমি।
কিন্তু সেইদিন তুই ছিলি না,
ছিল পুলিশ আর আমি।
আমার ডোরাকাটা লাল জামাটা ওগো পছন্দ হইছিল খুবই,
এর থাইকা ভালো চাঁদমারি তো হয় না!
তোর পোলার বুক ছেদা কইরা বাইরাইছে ছররা;
কিন্তু 'আনুরে...' কইয়া সেইদিন তুই মাতম তুলছ নাই।
কানছস। ঠিক কানছস।
মানুষ দেখে নাই, শোনে নাই
তোর বুকের গহীনের ক্ষরণ
খালি চোখে দেখে সাধ্যি কার!
তারা কাগজের পাতায় দেখছে-
ডোরাকাটা লাল শার্ট নিয়া প্রস্তর মূর্তি এক মা;
যেই রক্ত দিয়া ১০ মাস পেটে পালছস
তাতেই ভেজা ডোরাকাটা লাল শার্ট, ছিদ্র ছিদ্র।
মা তুই শক্ত হইয়া দাঁড়াইয়াছিলি, কান্দস নাই
তুই শহীদের মা- কান্দন তোরে তো মানায় না।
আশ্চয্য! এইডাও তোর মতো অশিক্ষিতরে
কেউ শিখাইয়া দেয় নাই!
আমাগো একচালা ছাপড়ার ঘর,
বিদু্যৎ দিয়া কী কাম!
বাজান যখন কয় 'দোকানে বয়'- আমি মিছিল দেখি।
ডোরাকাটা লাল শার্ট পইড়া
সবার আগে যাই-গুলি খাই।
আমার একটা ফটু তুলার শখ আছিল মা,
ফটু উঠছে, তাতে আমি নাই!
এই ফটু ঝুলবনা আমাগো বেড়ার কঞ্চিতে
এই ফটু, আমার গরবিনী মা'র দ্রোহের আগুনে হেম
ঝুলুক বাংলার প্রতিডা বিপ্লবীর অন্তরে।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন