রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০০৯

কবি অপূর্ব সোহাগের কবিতা







ঘর পালানো স্বপ্নরা গেয়ে যায় আরাধ্য সঙ্গীত
..........................

এরপর চলে গেলো বহুদিন। এখানে থেকে গেছি আমি ও আমার
স্বপ্ন। আমার গভীর বেদনা... এখানে খেলা করে আমার স্বপ্নের স্রোত,
এখানে জন্ম নিলো কত কত গভীর কথা।
এখানে এঁকেছি স্বপ্নীল আল্পনা!
ঘাসফড়িং - ব্যস্ততা আর কিছু অনির্ণীত দুঃখকে ভালোবেসে...
ভুলে যেতে চেয়েছি অনেক কিছু!
তবু হয়না সব কিছু; অন্ধকার গাঢ় হয় পৃথিবীর বুকে
ঘর পালানো স্বপ্নরা গেয়ে যায় আরাধ্য সঙ্গীত।

জেগে থাকি বহু দীর্ঘ রাত। হিসেব মেলাতে গিয়েও পারিনা,
অন্ধকারে ছবি আঁকি - বন্ধুমুখ।
নির্জনতার ভাষাও ভুলে গেছে প্রিয় কবি,
পাখিরাও যায়নি বলে নদীর ঠিকানা-
তাই হেঁটে যাই আমি পোষ্ট অফিসে,
গিয়ে দ্যাখি আমাকেই গেছে ভুলে ।


আমি আর আমার কথা
...................
অনেকগুলো মেঘ উড়ে যাচ্ছে পাখনা মেলে
মেঘের কুলে বসে বসে যাচ্ছে সময়।
বিকেলগুলো সেতু পার হচ্ছে সন্ধ্যার হাত ধরে।
দূরে রাখাল বালক দেখে পড়শী দিদি
মিশে যায় গোধূলির এই বেলায়।

জোনাকির রাত হন্য হয়ে ঘুরতে থাকে
ঘুমের পিছু পিছু। বালিশে সুখ নেই,
আন্ধার মাখামাখি বিছানায়!
কতো কি বাকি রয়ে যায়, বসে বসে
রাত্রি পাঠ করি...গোপনে ঢুকে পড়ি
অথৈ আন্ধারে। নক্ষত্রগুলোর চোখে কার মুখ যেন।
পৃথিবী একা। রাত উড়ে সহজ করে...
আমি সহজে পারিনা বলতে সহজ কথা,
আমি আর আমার কথা একলা, একলাই রয়ে যাই...


চিত্রল প্রতিবেদন
...............

শাদা পোশাকের ভেতর লুকিয়ে আছে গতকাল বিকেলের
হাতের স্পর্শ এবং না থাকার অনেক শব্দ!
আমি এর আগে, যখন সমুদ্রে শুয়ে ছুঁয়েছিলাম অজস্র সম্ভাবনা
ও একটি না ফোটা লবণাক্ত ফুল, তখন রক্তে ছিলো না
কোনো রঙের আনচান। ছিলো না ঢেউয়ের মিররে
চিত্রল কোনো প্রতিবেদন! ছিলো শুধু অপেক্ষা
চিত্রলেখা ভোরে'র...

চিত্রলেখা যখন ভাগ্য রেখায় বদলে যায়। বদলে যায় বাঈজী সন্ধ্যা,
আমি কেনো জানি তখন শুধু ভাবি শাদা রঙের বাগান;
আর মনে হয় সমুদ্র নাই আছে যা তা শুধু লবণের স্বাদ।

আজ যখন পৃথিবী ঘুমিয়ে গেলো তোমার চোখে,
তোমার দিগন্তে কোনো রাইফেল আর বন্দুক কাঁধে না নিয়ে
কেবল তোমাকে বহন করে হেঁটে যায়,
কে যেন তখন শাদা ঢেউ আর সমুদ্রের গল্প বলে আমার কানে কানে


ভাঙ্গণেই আমার সুখ
...............
আমি এখনো নদী পাড়েই দাড়াই
গোপনে ঢুকে পরি কুমারী জলদলে,
দূরে একেলা পাহাড়চূড়া শিস কাটে...

নিঃশ্বাস ভেসে যায় হাওয়ার অনুকূলে-
আর ভাবী কী নামে ডাকলে
আন্তরিক সঙ্গ দিতো হলুদ পাখি!

তোমাদের এই গৃধিনীর সাতপ্যাঁচ সব বুঝিনা আমি
জানে মর্ম কারিগর।
নদী পাড়ে মৃত ঘাস, এতো আমি
আমার বংশের দাগ-খতিয়ান;

ছায়াঘুম-নীরব সন্তরণ, নদীর নিঃশ্বাস
খুলে যাবে একে একে।

ভাঙ্গণেই আমার সুখ!

1 টি মন্তব্য:

  1. অপূর্ব সোহাগ-এর একটি কবিতা যেটা বেশ ভালো লাগে...
    যেটা পড়ি প্রায়ই...


    অন্তত তুই আমাকে বলিস

    অন্তত তুই আমাকে বলিস বিন্দু
    কেনো আজ-কাল এমন হয়।
    অন্তত তুই আমাকে বলিস,
    তোকে ঘিরেই তো আমার শান্তির
    পায়রা উড়ানো। বলতে পারিস
    কেনো এমন হচ্ছে?
    কেনো আমি ঘুমের ভেতর দেখি
    পৃথিবী আমার ভেতর মিশে গেছে!
    কেনো আমার বালিশ'টাকেও মনে হয়
    বিষাদ মেঘের পাহাড়!
    কেনো শরীর ঘামলেও আমার
    মনে হয় আমি কষ্ট পাচ্ছি! খুব!!
    কষ্ট ছাড়া আমার চলে না,
    তবু বিন্দু, তুই আমাকে বলিস
    কেনো আমি বিপরীত মুখি হয়ে যাচ্ছি
    দিন প্রতিদিন।
    কেনো আমি বেঁচে থেকেও
    মৃত্যুর সাথে খুব পরিচিত...
    সব "কেনো"র উত্তর তুই আমাকে
    বলিস বিন্দু, শহরের কোনো আবৃত্তি সন্ধ্যায়।
    এবঙ সবশেষে আমাকে
    মৃত ঘোষনা করে তুই বাঁচিয়ে দে...
    তুইও বেঁচে যা...

    উত্তরমুছুন