রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০০৯

কবি রায়হান রাইন-এর কবিতা




‌‌''জন্মদাগ'' থেকে নির্বাচিত কয়েকটি কবিতা

রায়হান রাইন



১. আত্মরক্ষা

স্বপ্নে দেখলাম অজ্ঞাত এক বন্দুকধারীকে;
খুব কাছ থেকে একজোড়া পাথরের চোখ আমাকে দেখল।

বাবা বললেন, মৃতদের কারো কারো আত্মীয়-স্বজনকে তিনি চেনেন;
তারা আমার মায়ের পাঁজরে দিনরাত দীর্ঘশ্বাস ফেলে।

দেখলাম, কবরের বেড়া ধরে এক বৃদ্ধ চীৎকার করছেন,
সেই চীৎকার-গর্ভে কেউ কি চাইছে ঘুমাতে আরও অন্তত একশোটি বছর?


২. অপদার্থ

গাঙে সাঁতার কেটে গ্রামে এক বাঘ এলো;
জ্বলন্ত আগুন-উজ্জ্বল এক বাঘ;
যে বাড়িতেই যায় পিঁড়ি পেতে বসতে দেয় সবাই।

একবার গরীব কৃষক লাঙল টানিয়ে নিলো,
নিরুপায় বৃদ্ধ মোট বওয়ালো তাকে দিয়ে;
গ্রামান্তের করুণ বেশ্যাটির সঙ্গে তার ভাব।

সে কোনো ধর্ম প্রচারের চেষ্টা করেনি,
মারাও গিয়েছিল অন্য দশটা অপদার্থের মতো!


৩. বিস্মরণ

যখন আমরা ভুলে যাই ছেড়ে আসা কোনো ঘাটের নাম;

কোনো চেনা মুখ যখন কিছুতেই আর মনে পড়ে না;

যখন ভুলে যাই কততমবার অংশ নিচ্ছি শোকমিছিলে;

যখন জল বিস্মৃত হয় তোমার গন্ধ;

যখন গ্রহিতা ভুলে যায় কে তাকে রক্ত দিয়েছিল;

যখন দেয়া হয় না নতুন দুঃখের নাম;

যখন আমরা মনে করতে পারি না শেষবার কবে বেঁচে উঠেছি নিজেদের দেহে

ধসে পড়া কবরের গা থেকে তখন ঝুলে থাকে বরফশাদা একখানা হাত।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন