রবিবার, ২৩ আগস্ট, ২০০৯
কবি টোকন ঠাকুরের কবিতা
চালচিত্র
....
চন্দ্রের প্রভাব...
লঘু বাক্যে গুরু গুরু ভাব
বস্তুত, মূলত, ফলত, প্রসঙ্গত
তো তো তো
ঢাকার রাস্তায়, শপিংমলে, দলে দলে যতই দেখা যাক
বাসাতেই প্রচণ্ড নারীর অভাব
যদি বা প্রসঙ্গ চেঞ্জ: বাড়ি বাড়ি, বাসায় বাসায়
আজিকার যত নারিকেল
একদিন ছিল ডাব
লঘু বাক্যে গুরু গুরু ভাব
বাড়িতেছে সূর্যের প্রভাব...
মে মাসের রোদ মেরে ঘুরে বেড়াচ্ছি, খুঁজে বেড়াচ্ছি
আজিকার যত ডাব
যত যত ডাব...
০২/০৪/২০০৯
আমি রিলেটিভ, মেসো
...............
যমুনা বলিতে পারিত, ‘আবার আসবেন’
কিন্তু যমুনা কহিল, ‘... এসো’
আমি নির্বাক, আমি কবিযশোপ্রার্থী
আমি রিলেটিভ, আমি যমুনার মেসো
যমুনা বলিতে পারিত, ‘ব্যাগটা একটু ধরেন’
যমুনা শুধু বলিল, ‘মেসো, ধরেন’
ধপ করে কারেন্ট চলে গেল, ধব ধব
ঢিব ঢিব... বুকের মধ্যে শব্দ হচ্ছিল ধুব ধুব
মনেই ছিল না যে, আমি কে? আমার নাম কি হরেন
না নরেন?
আমি যমুনার মেসো হই, যথেষ্ট ডিস্টেন্স
ডিস্টেন্স ঘুচাল কে? আমি, না যমুনা?
যমুনা বলতে পারত, ‘ব্যাগটা আবার ধরেন’
কিন্তু বলল, ‘ধরেন’
বললাম, ‘কি?’
বলল, ‘কমু না’
বিদায়লগ্নে, ‘আবার আসবেন’ না বলিয়া কহিল, ‘... এসো’
সঙ্গত ধাক্কা খাই, ধাক্কায় ধাক্কায় উঠে দাঁড়াই, দাঁড়াতে হবেই
কারণ, আমি রিলেটিভ, আমি যমুনার মেসো
খাদ্যখাবার
........
দিঘিতে হাঁস শামুকদানা খোঁজে
শরীর ভাসে… নাখমুখঠোঁট জলে
দিঘিতে হাঁস ঝিনুকদানা খোঁজে…
মৃগয়াকে ব্যাঘ্র… বনস্থলে
প্রয়োজনীয় খাদ্য মনে করে
তোমার বুকে কী খুঁজেছি কাল
শামুক? ঝিনুক? মাতৃশিশুকাল?
তোমার বুকে কী পেয়েছি কাল–
পুরো শৈশব, হুলো বাল্যকাল?
মৃগয়াকে ব্যাঘ্র… বনস্থলে
নিজের জন্য খাদ্য কনফার্ম করে
কাল কি ছিল অতিরিক্তকাল?
তোমার বুকের তিলটি ছিল তাল… !
এমন কি তিল কৃষ্ণ নহে, লাল?
কালকে আকাশপাতাল ছিল কাল… !
কালকে আমি বনস্থলে ছিলাম
প্রমাণ ছিল, ব্যাঘ্র আমার নাম
তোমার বুকের মাংশ ছিল, কাঁচা
তাই খেয়েই তো আজ পর্যন্ত বাঁচা–
কাল পর্যন্ত বাঁচতে যদি চাই
ব্যাঘ্র আমি, কাঁচামাংশই চাই
বকের চোখে পুঁটির ছবি আঁকা
পুঁটির চোখেও কেঁচো আঁকা ছিল
তোমাকে খেয়ে আমার বেঁচে থাকা
না খেয়ে কারও বেঁচে থাকা ছিল?
২৩/২/২০০৯
খাদ্যখাবার
........
দিঘিতে হাঁস শামুকদানা খোঁজে
শরীর ভাসে… নাখমুখঠোঁট জলে
দিঘিতে হাঁস ঝিনুকদানা খোঁজে…
মৃগয়াকে ব্যাঘ্র… বনস্থলে
প্রয়োজনীয় খাদ্য মনে করে
তোমার বুকে কী খুঁজেছি কাল
শামুক? ঝিনুক? মাতৃশিশুকাল?
তোমার বুকে কী পেয়েছি কাল–
পুরো শৈশব, হুলো বাল্যকাল?
মৃগয়াকে ব্যাঘ্র… বনস্থলে
নিজের জন্য খাদ্য কনফার্ম করে
কাল কি ছিল অতিরিক্তকাল?
তোমার বুকের তিলটি ছিল তাল… !
এমন কি তিল কৃষ্ণ নহে, লাল?
কালকে আকাশপাতাল ছিল কাল… !
কালকে আমি বনস্থলে ছিলাম
প্রমাণ ছিল, ব্যাঘ্র আমার নাম
তোমার বুকের মাংশ ছিল, কাঁচা
তাই খেয়েই তো আজ পর্যন্ত বাঁচা–
কাল পর্যন্ত বাঁচতে যদি চাই
ব্যাঘ্র আমি, কাঁচামাংশই চাই
বকের চোখে পুঁটির ছবি আঁকা
পুঁটির চোখেও কেঁচো আঁকা ছিল
তোমাকে খেয়ে আমার বেঁচে থাকা
না খেয়ে কারও বেঁচে থাকা ছিল?
২৩/২/২০০৯
তরুণ কবি
.........
যদি… মাত্র… তবে
হবে কি হবে না হবে?
নদী মাত্রই জল
উতলা ধরণী তল…
নারী মাত্রই, ঠারে-
ভাব, আকারে-বাকারে
ইথারে চিরকালের কথা
ঘুরিছে নিয়মমাফিক, প্রথা
প্রেম?
প্রথার মধ্যেই পড়ে
ধাক্কা তুমুল ঝড়ের…
ঝড় মাত্রই থামে
আকাশ দূরে নামে–
মাঠকে আড়াআড়ি
তরুণ কবির বাড়ি… (তার)
ফেরার টাইম কই?
ছাপা হচ্ছে বই…
ছাপা হচ্ছে জ্বালা
অগ্নি-কর্মশালা
ছাপা হচ্ছে দুঃখ
(আত্মপ্রকাশ মুখ্য)
ছাপা হচ্ছে দ্রোহ
অনন্ত নীল গ্রহ
নীল গ্রহেই থাকে
তরুণ কবি যাকে
নিজের ছবি আঁকে
যার ভেতরে আঁকে
তার ভেতরে আঁকে
শরীর মনের বাঁকে
শরীর হয়েই থাকে
মন যে শরীর আঁকে…
আঁকা লেখার ছবি
খা খা একার ছবি
দগ্ধ দেখার ছবি
মুগ্ধ থাকার ছবি
দুক্কুরেও ভৈরবি… (হায়)
তিন রাস্তার মোড়ে
ঘুর্ণি হাওয়া ওড়ে
নেশাও আসে নেশার
মহাজাগতিক পেশা–
দাঁড়িয়ে থাকে দাহে
রুক্ষ তরুণ কবি
বৃক্ষ তরুণ কবি
সূর্য তরুণ কবি
দগ্ধ তরুণ কবি
কী চায় তরুণ কবি?
৬/৩/২০০৯
বসন্তরজনীতে বসিয়া রচিত কবিতা
.....................
নিষ্প্রয়োজনে
আমি
ছোট নাম লেখাতে গেছি
কবির খাতায়
নিজ প্রয়োজনে
আমি
নক্ষত্রের দেনা
নিয়েছি মাথায়
বিষ-প্রয়োজনে
আমি
সাপ ও বেদেনী
চেয়েছি দুটোয়
দুহাতে দুধের ছানা, বেপরোয়া মুঠোয় মুঠোয়
সম্পূর্ণ ফুটেও নারী, ক্লাসিক্যালি অস্ফূট…
So, আজ আমাকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হলো–
আমি কি কবি ছিলাম? সাপুড়ে ছিলাম? নাকি ছিলাম যা, তাই?
শিস্ প্রয়োজনে
আমি
হাওয়া ধাক্কা দিচ্ছি
বসন্ত-জঙ্গলে গাছদেবতার
শুকনো পাতায়
কে আমি? বিখ্যাত কেউ? কী ছিলাম? গুরু কেউ? লঘু ঢেউ?
ঝরনার বাথরুমে শাওয়ার ছিলাম?
সুহাসিনীর ড্রেসিং টেবিলে আয়না ছিলাম?
গুপ্তকথা হচ্ছে, আদতে সেই রাক্ষসদের ছেলে, মানুষের ছদ্মবেশে থাকি
যোগ্যতা, নিজের মুখে জোসনারাত অনুবাদ করতে পারি, এর বাইরে
আমি যা ছিলাম, তাই…
ছিলাম যা, তাই…
বর্ষায় টোকন ঠাকুরের কবিতা
...................
বিশিষ্ট এলাকা, একটি রেস্টুরেন্ট
এই এলাকার দুবলোঘাসেরও খুব নামডাক
সকালবেলার পাখিরা বলে, ভালো থাক ভাই
ভালো থাক বোন, বন্ধু, তুই ভালো থাক
ছেলেটি জানায় সুদূর টেবিলের ওপারের মেয়েটিকেÑ
‘মুখোমুখি বসে থাকলে রেস্টুরেন্টের মালিক পয়সা নেয় না...’
চোখ তাকিয়ে থাকে চোখের দিকে
এই এলাকার বোকারা বোবা, প্রেম জানায় কবিতা লিখে
এই এলাকার দুপুরগুলো কৈশোরক, স্বপ্নময়, হারানো ছবি
বিকেলের বর্ণনা দেওয়া বাংলা ভাষায় এখনো অসম্ভব
শুধু সন্ধে থেকে সারারাত প্রচণ্ড ভয়, দখল নিয়ে কখন কি হয়?
কিন্তু কেউ ভালোবেসে যদি কারও হাত ধরে, তার জন্যে
এই এলাকাই সর্বোচ্চ নিরাপদ, অন্ধকারও কিছু নয়
ভূমি মন্ত্রণালয় এখনো জানে না, ডেভেলপাররাও না, লোকচুর
আড়ালে অবস্থিত
খনি-সমৃদ্ধ এলাকাটা আমার বুকের মধ্যে, ডুবন্ত দ্বীপ
এখনো অনাবিস্কৃত...
আর এখানে একটা রেস্টুরেন্ট আছে- যার মালিক
কোথাও কোনো খাজনা দেয় না
এবং ভালোবেসে সারাদিন মুখোমুখি বসে থাকা
ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে কোনো পয়সাও নেয় না
ওহ্ বসন্ত
.........
এক কবুতর
দুই কবুতর
তিন কবুতর ডাকে
সকালবেলায় কবুতররা গল্প শোনায় কাকে? তোমাকে?
এক জোনাকি
দুই জোনাকি
তিন জোনাকি ওড়ে
পাতাস্তূপের মধ্যে যখন হস্তে লেখা চিরকুটটাও পোড়ে
এক হরিয়াল
দুই হরিয়াল
তিন হরিয়াল গাছে
দুপুরবেলায় বুঝতে পারি, আমার বুকে ঘুঘুর বাসা আছে
এক মৃগয়া
দুই মৃগয়া
তিন মৃগয়া বনে
ইমেল পাঠায় ফিমেল হাওয়া
বন্য হবার (দস্যুবৃত্তির)
তুরীয় নিমন্ত্রণে...
০১/০৪/২০০৯
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন