ব্রাত্য রাইসুকে লেখা চিঠি
Share
Saturday, December 27, 2008 at 11:52am | Edit Note | Delete
আমি একজন পাঠক।
আপনারা যখন লেখালেখি করেন গভীর আগ্রহ নিয়ে পড়ি। আপনাদের লেখার মানবিক দিকগুলো বোঝার চেষ্টা করি যার উপরে সভ্যতা, কল্যাণ একটু একটু করে এগিয়ে যায় সামনের দিকে। একে বোধ হয় প্রগতিশীলতা বলে।
আপনি যখন লিখতেন রাস্তার মানুষদের নিয়ে- আপনার সভ্য তৃষ্ণা টের পেতাম।ভাবতাম সেই মানুষগুলো এসে যাচ্ছেন যারা আমাদের জীবনের চাকাকে সামনের দিকে ঠেলে নিয়ে যাবেন।
এরপরতো আপনি লিখলেন কালি দাসের লগে মেঘ দ্যাখতাছি। আপনিও মেঘের অন্বেষণে বেরিয়ে পড়লেন। এর মধ্যে ফুকোরা এসে গেল। মার্কসরা মন খারাপ করে পেছনে জলে গেলেন। একজন কবি দার্শনিক এনজিওবিদ এমনকি স্বঘোষিত কৃষিবিদ অদ্ভুত সব ব্যাখ্যা দিতে শুরু করলেন সভ্যতার, সংগ্রামের- বেচেঁ থাকার। এ ব্যাখ্যা তো ১৯৪৭ সালের পর থেকে এসেছিল। তার জন্য ১৯৫২ এলো- এলো ১৯৭১। সামনে কি দিন অপেক্ষা করে আছে কে জানে! দু:স্বপ্ন দেখা ছাড়া ঘুম আসে না।
১৯৭১ সালে জামাতীদের হিটলিস্টে সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর নাম ছিল।ধন্যবাদ কপালকে তিনি বেঁচে গেছেন। এখন কি তিনি নিরাপদ?তিনি একজন নিরাসক্ত মানুষ। তিনি লালন ভাস্কর্য ভাঙ্গা নিয়ে যে প্রতিবাদ করেছেন তার যে কটাক্ষ-ব্যাখ্যা আপনি দিয়েছেন তা আসলে আমিনীদের পক্ষের ভাষ্য। দার্শনিক মহোদয়তো সরাসরি আমিনীদের সুরে কথা বলেন না। তিনি ঘুরিয়ে পেচিয়ে ফুকো, মার্কস- নন্দনতত্ব এসবের মোড়কে আমিনী/নিজামীদের হণ্ঠ ধার করেন। আপনিওতো সে সুরে কণ্ঠ মেলালেন।
প্রগতিশীলদের তথাকথিত বললেন। বললেন ভাস্বর্য ভেঙ্গে ফেলা দরকার। আপনার আক্রমণটা মৌলবাদীর বিরুদ্ধে নয়- প্রগতিশীলদের বিরুদ্ধে। কারণ হিসাবে চমৎকার বলেছেন শিল্পমান বিষয়ে আপত্তি তুলে। আপনিওতো ছবি আঁকছেন।কিভাবে আঁকছেন চারুকলার বিদ্যা ছাড়া তার নানা রকম কথকতাও দিয়েছেন। আপনি কি মনে করেন এগুলোর শিল্পমান নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলবে? দুর্বল এসব আকাঁউকি অন্যের দেখা ঠিক নয়? আপনি যা লিখছেন তা পড়ে যদি কেউ বলে বসে আপনি ভাষাকে ন্যাংটো করে দিচ্ছেন- আপনাকে অশ্লীল বলে বাতিল করতে চায় তাহলে?
না, মহোদয়, ঠিক নয়। যে দেশে শিল্প নাই, শিল্প ভাঙ্গার আতঙ্ক আছে- সেখানে শিল্প চর্চা/শিল্প প্রকাশ জরুরী। এভাবে শিল্পের পক্ষে জনরুচী গড়ে উঠবে। ধীরে ধীরে নন্দনতত্বও এসে যাবে।
এ শিল্প ভাঙ্গার হুঙ্কার আমিনীরা দিয়েছেন, আপনারা তার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন চৌধুরীদের ঠাট্টা করে।
আমিনীদের পক্ষে চোঙ্গা ফুকিয়ে লাভ কি? ওরা যেদিন ক্ষমতায় আসবে সেদিন আপনারা যারা উত্তরাধুনিকতার নামে ধর্মে আছেন- জীরাফেও আছেন তাদেরকে কি ছেড়ে দেবে? দেবে না। আফগানিস্তানের ইতিহাস তাই বলে। এরা শিল্প সাহিত্য ধংস করে দেবে। এদের কোনো নির্মাতা তা তাদের পক্ষে হোক আর বিপক্ষের হোক কাউকে এরা রেখে দেবে না।
কবিরা তো ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা। ভ্রষ্টা হওয়া কি মানায়?
ধন্যবাদ।
-রায়
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন