সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০০৯

কবিতা নাটক : কোনো ডাকঘর নেই


কবি মুস্তফা আনোয়ার



সুধা:
আচ্ছা বলতো অমল,
আমাদের যদি বিয়ে না করেই কেটে যেতো জীবন
তবে কেমন হতো।

অমল:
ভালোবাসা না ডুবলে কি চাঁদ ওঠে
আকাশে এতো তারা কি ফুটতো;
এতো দুঃখ; এতো বিষাদ -
এতো হাসি, এতো ডালপালার ভালোবাসাবাসি;
এসব হয়তো কিছুই হতো না।

সুধা:
কিন্তু তুমি যে অসুস্থ লোক -
নিউরোটিক; ড্রাগএডিক্ট।
ছোটবেলা থেকেই তুমি অদ্ভুত
খারাপ কথা চিন্তা করতে।
আর আমি সেই বালিকা বয়স থেকেই,
যখন আমার মধ্যে কোনো নারী আসেনি;
তোমাকে ভালোবেসেছিলাম।
কি করে সম্ভব হয়েছিলো তা;
হয়তো তখন আমি নিজেই অসুস্থ ছিলাম;
হয়তো আমার রোগ ছিল চোখে।
আজ আমার চোখে কোনো রোগ নেই
কোনো অসুখ নেই, অথচ তুমি
সেই অসুস্থ, অসুস্থ-অসুস্থ-অসুস্থ ।
তুমি কোনোদিন আর ভালো হবে না অমল?
আমি তোমাকে কিছুতেই ভালো করতে পারলাম না।

অমল:
কিন্তু সুধা - আমিতো জানতাম তুমি এক
অসুস্থ লোককেই ভালোবেসেছো,
তুমি সেই অসুস্থ লোকটাকেই ভালোবাসবে চিরকাল।
কে জানতো তোমার মধ্যে এক অজগর লুকিয়ে আছে
আমাকে ভালো করার লোভ নিয়ে; কে জানতো তা।
তবে হয়তো আমি বন্ধঘরে, জানলার কাছে
বসে, আকাশ দেখে-দেখে
আর দশ বিশটা বছর কাটিয়ে দিতে পারতাম।

সুধা:
তবে আমার এসে কি লাভ হলো তোমার কাছে,
তবে আমার কি লাভ হলো তোমার কাছে এসে।
আমি যদি তোমাকে ভালোই না করতে পারলাম,
তবে আমি কেন
আমি সুধা কেন
মিসেস অমল হবার কি দরকার।
আমারওতো কোনো মিশন থাকতে পারে
আমারওতো কোনো গোল থাকতে পারে
আমারওতো কোনো লক্ষ্য থাকতে পারে;
এসবের কোনো দাম তুমি দেবে না অমল?
অমল, তুমিতো ইচ্ছে করলেই পারো
ভালো হতে, তবু কেন হও না অমল?
অন্তত আমার জন্য হও লক্ষ্মী
লক্ষ্মী অমল আমার; দুষ্ট ছেলে।

অমল:
কিন্তু আমি কিছুতেই বুঝতে পারি না সুধা
তুমি কি করে চল্লিশ বছরের বুড়োহাবড়াকে
তোমার চোখের জলে ধুইয়ে দিতে পারবে,
কি করে তাকে পরিষ্কার করতে পারবে -
কি করে তাকে
এ-যে অসম্ভব - এ-যে অসম্ভবের পায়ে
মাথা খুঁড়ে রক্ত বার করা -
কেন তুমি চেষ্টা করছো, তুমি বরং -

সুধা:
বরং আমি চলেই যাই এইতো,
এইতো বলবে, দরজা খোলা, বেরিয়ে যাও, আমার
ঘর থেকে চলে যাও। এইতো বলবে।
ব্রুট, হিংস্র বদমাশ লোক,
অসুস্থতার ভান করে, অসুস্থতাকে একটা পুঁজি বানিয়ে
আর কতোদিন মানুষকে ঠকিয়ে বেড়াবে অমল।
এসো আমরা আকাশের নিচে দাঁড়াই।
এসো আমরা কথা বলি বাতাসের সঙ্গে।
এসো আমরা আকাশের খনি থেকে ভালোবাসা
লুঠ করে নিয়ে আসি।
তুমি ভালোবাসার খনি খোঁড়ো আর আমি
ঝুড়ি-ঝুড়ি মাথায় তুলে নিয়ে আসি।
এসো, আমরা শ্রমিক হই।
এসো, আমরা মানুষ হই।
এসো, অমল এসো, আমার হাত ধরো
এ অন্ধকার থেকে বেরিয়ে এসে, চলো আমরা
বাইরে আলোতে যাই।

অমল:
এতো বড় চল্লিশ বছর ধরে যা ঘৃণা করে এসেছি,
তুমি সেখানে আমাকে ডাকছো।
এটা ঠকানো ছাড়া আর কি?
আমাকে ঠকাবার অধিকার তোমাকে কে দিয়েছে।
আমিতো শুধু ভালোবাসার অধিকার দিয়েছিলাম।

সুধা:
বুঝেছি, বুঝেছি, তুমি আমাকে তাড়াতে চাও - এইতো?
বেশতো না-হয় চলেই যাবো,
একেবারে চলে যাবো।
হ্যাঁ, তোমাকে ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট অনেক
কি যেন সেই -
মনিহার ছেঁড়ার কষ্টের মত;
তবু, যাবো। যাবো।

অমল:
আমি জানতাম তুমি যাবে, থাকবে না
এই নিউরোটিক পেশেন্টের কাছে কেউ
থাকতে পারে না। কোনো মে-লোক পারে না

সুধা:
আসলে তুমি প্রতারক
তুমি অন্যকোথাও অন্যকোনো নতুন কচি
ভালোবাসায় মজে গেছো;
আমি টের পেয়েছি।

অমল:
হয়তো তাই। কিন্তু আমি সিংহ বা কর্কটকে বশ
করার জন্য আঙুলে কোনো পাথর পরবো না।
আমি এই বন্ধঘরে অসুস্থ থাকবো,
আমাকে প্রতারক বলো, আমাকে ভণ্ড বলো
আমাকে ঘৃণা করো, যা খুশি তাই করো;
আমি; আমিই। আমি আর কোথাও যাবো না
আমি এখানেই থাকবো, কেন না এখানে
কোনো ডাকঘর নেই।
এখানে কোনোদিন কোনো ডাঘর হবে না,
সেই জন্যে আমি আর কোথাও যাবো না
আমি এখানেই থাকবো,
তুমি
যাবে
যাও।

সুধা:
যাবোই তো। একশোবার যাবো। কেন থাকবো।
আমার এতো কান্না যখন তোমার
বুকের ফার্নেসে ক্রিস্টাল হলো না, আমি কেন থাকবো।
যাবো। যাবো।

অমল:
তবে - তোমার কোনো খোঁজখবর কিছুই পাবো না আমি?
সারা জীবন একটা চিঠিও না;
এখানো কোনো ডাকঘর নেই; এখানে
কোনো চিঠি পৌঁছাবে না - তবে, তবে -

সুধা:
তবে কিছুই নয়;
তুমি তোমার জানলায় দাঁড়িয়ে থেকো
আর ঐ নিচের মিস্টিক বুকলগাছটার দিকে চেয়ে থেকো,
কান পেতে শুনো -
শুনতে পাবে, একটা মে’ চেঁচাচ্ছে -
শোনো, পাড়ার লোকেরা শোনো,
তোমরা অমলকে বোলো, সুধা তাকে ভুলে গেছে।
সুধা তাকে একেবারে ভুলে গেছে।

অমল:
আজকাল আর কেউ মনে রাখে না।
সবাই ভুলে যায়,
তুমিও ভুলে যাবে, বালিকা বয়সের সুধাকে,
প্রেমিকা সুধাকে, স্ত্রী সুধাকে,
ভুলে যাবো সুধাকে,
আমিও একেবারে ভুলে যাবো।
কিন্তু শুধু ভুলতে পারবো না;
একটা ছোট্ট ফুটফুটে কচি মেয়ে কেন এক অসুস্থ বালককে
ভালোবেসেছিলো। কেন এক খারাপ লোককে ভালোবেসেছিলো।
টান ছিলো। কেন ছিলো।
এই বন্ধঘরে একা বসে-বসে
এই অসুস্থ শরীর নিয়ে, এই প্রবলেম-এর মীমাংসা করতে-করতে
একদিন মরে যাবো;
ঘরে কতগুলো হাড় জমে থাকবে।
এইতো অমল ও সুধার ঘটনা, জীবন -
একটা চিঠি - যা কোনোদিন কারো হাতে পৌঁছায় না;
যেহেতু পৃথিবীতে কোথাও কোনো ডাকঘর নেই।

সুধা:
তবে চলি হে সিউডোফিলোসফার চলি;
শাঁওলীও যাচ্ছে আমার সাথে।

অমল:
এটাই চেয়েছিলাম আমি হয়তো।
তবে এ বৃষ্টিভেজা রাতে না গেলেই কি নয়?
বাইরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে, শব্দ শোনা যায় না,
কিন্তু বৃষ্টি-তো -
মনে পড়ে-এ বৃষ্টির রাতেই শাঁওলী তোমার রক্তে এসে
মিশেছিল, তার পরেই - আমরা বিয়ে করেছিলাম।

সুধা:
আমি এক সুস্থ মহিলা -
ইমোশান আমাকে সংক্রামিত করতে পারে না।
আমার সামনে এখন অনেক বড়-বড় পথ বাকী -
এই রাত বা এই যে বল্লে বৃষ্টি
এটা কিছু না, একটা ভাঁওতা।
রাতে বা বৃষ্টিতে আমাকে চলাফেরা করতে হয়,
করে এসেছি এতোদিন; আমি টিভিতে অভিনয় করি -
আমি রেডিওতে অভিনয় করি - আমি মঞ্চে অভিনয় করি -
আমি চাকরি করি। আমি একলাই চলি;
আমি একলা। আমি একলা।

কিন্তু তার চেয়ে বড় কথা,
শাঁওলীকে মানুষ করতে হবে -
তোমার কাছে থাকলে, ও অসুস্থ হয়ে যাবে,
ওরও হাড়েহাড়ে পোকা ধরে যাবে,
ওর এখন ষোলো বছর বয়স, ওর রক্তে
এখন যৌবনের টগবগে প্রতিভা।
ও তিনটে ভাষা গড়গড় করে বলতে পারে;
ইংলিশ ফ্রেঞ্চ জার্মান,
ও রবীন্দ্রসংগীতে ফার্স্ট হয়েছিলো;
ও খুব ভালো ভায়োলিন বাজাতে পারে।
ওকে আমি নষ্ট হতে দিতে পারি না, আর
আমাকেও আমি নষ্ট করতে পারি না।
আমরা দু’জন সুস্থ নারী, সুস্থ মানুষ।

(শাঁওলী এসে অমল ও সুধার মুখোমুখি দাঁড়ালো।)

শাঁওলী:
বাবা, তুমি নাকি মাকে অপমান করেছো
তুমি নাকি মাকে কোনোদিন ভালোবাসতে পারোনি
তুমি নাকি চিরকাল তাকে ঠকিয়েছো, ভণ্ডামি করেছো।

অমল:
শাঁওলী, এটা আমাদের ব্যক্তিগত গল্প;
তুমি কেন এর মধ্যে এসেছো?
তুমিতো আমাদের দু’জনের - আলাদা
তুমি বাইরে দাঁড়িয়ে থাকো।

শাঁওলী:
হ্যাঁ, সেটাই সুখের হতো।
কিন্তু, তুমি আমার মা;
তোমার স্ত্রী; মিসেস অমলকে ঠকিয়ে
আমাকেও ঠকিয়েছো।
তুমি শুধু পিতার পার্ট করেছো,
তুমি আমার বাবা হতে কোনোদিন পারোনি।
মা বলছে, তুমি তা কোনোদিন পারবে না -
তোমার মধ্যে ভালোবাসার শক্তি নাকি ফুরিয়ে গেছে,
তোমার সমস- কথায় পিঁচুটি জড়িয়ে থাকে,
ঝরা পাতা নড়ে,
তুমি নাকি একটা ভেঙে-যাওয়া ডাল,
তুমি নাকি একটা কৃত্রিম মরুভূমি।

সুধা:
শাঁওলী, তোর বাবা এক রাজা প্রতারক;
ও-যে তোকে ভালোবাসে, সেটা ওর নষ্ট চোখ,
ও তোর বয়সের সব মে-কেই ভালোবাসে,
ও একটা পোকার চেয়েও ক্ষুদ্র; কিন্ত বৃহৎ খারাপ -
একেবারে পচা গলা নষ্ট হয়ে-যাওয়া শুয়োরের মাংস।
অমল, আমাদের দু’জনকেই ঠকিয়েছে,
দুই-নারী আমরা, দুই-নারীকে ঠকিয়েছে।

শাঁওলী:
বলো, বাবা কিছু বলো।
অমন ভাস্কর্য হয়ে যেও না,
কিছু বলো - আমি কিছু শুনতে চাই,
আমি সত্যি কথা শুনতে চাই,
বলো, মা যা বল্লো সব সত্যি। সব সত্যি।

অমল:
পৃথিবীতে কিছুই সত্যি নেই শাঁওলী,
কিছুই সত্যি নেই।

সুধা:
সিউডোফিলোসফার, ভণ্ড, ভাঁড়।

শাঁওলী:
আ, মা চুপ কর, দোহাই তোর চুপ কর্,
আমাকে কথা বলতে দে; আমার বাবার সাথে -
আমার জন্মের সাথে।

অমল:
আমার কথা তুই ডালপালার মধ্যে শুনতে পাবি,
আমার কথা তুই ঘাসের মধ্যে শুনতে পাবি,
আমার কথা তুই মেঘের মধ্যে শুনতে পাবি।
আমার কাছে কি শুনবি।

শাঁওলী:
আ, বাবা কাব্য করো না। কবিতা বাদ দাও।
সত্যি কথা বলো। সত্যি কথা।

অমল:
সত্যি কথাই তো বলছি,
আমরা তো কাব্যই করছি,
কাব্য ছাড়া আর কি?
আমরা যা কিছু বলি না কেন,
সবি তো বাতাস, সবি তো পদ্য - সবি তো, সবি তো।
এই যে তোদের চলে-যাওয়া
বা সুধার মিসেস অমল হওয়া
এই ঘর; জল নড়া; পাতা পড়া;
এ সবি তো পদ্য,
কাব্য আমি কী করবো, আমার ভাষাই তো এই রকম।
তবে তোর মা, অর্থাৎ আজকের মিসেস অমল
অনেকদিন আগের সুধা
যা বলছে - সব সত্যি।
সবকিছু আপেক্ষিক, তাই সত্যি; সেই জন্যেই শুধু সত্যি।
অথচ আমার কাছে সব মিথ্যে। সব মিথ্যে।
আমি লোকটা খুব খারাপ এটা সত্যি -
এর চেয়ে বড় সত্যি আর কিছু নেই।

শাঁওলী:
তবে তুমি আমার বাবা নও।
তুমি তোমার রক্ত ঢেলেও বাবা হতে পারলে না -
এ-পরাজয় শুধু তোমার একার, আমাদের নয়।
হ্যাঁ, আমাকেও যেতে হবে তবে তোমাকে ছেড়ে,
যেতে একটু কষ্ট হবে -
তোমার চোখে এখন ছানি পড়েছে,
তুমি কম দেখতে পাও;
এটা-ওটা কে দেবে তোমাকে হাতের সামনে তুলে।
তোমাকে ছেড়ে যেতে আমার কষ্ট হবে, বাবা,
কিন্তু - তুমি আমার মাকে অপমান করেছো -
যাক, সেটা একটা ব্যক্তিগত গল্প তোমাদের।

কিন্তু তুমিতো আমাকেও অপমান করেছো, করলে।
তুমি কেন হঠাৎ ঋষি হয়ে উঠলে,
ভালোলোক হয়ে গেলে - সত্যি কথা বলে ফেলতে পারলে।
হয়তো যা-যা বলেছে তা সত্যি,
আমার জন্যে তোমার ভালোবাসাটা একটা নষ্ট-টান,
আমার পরগাছা যৌবনকে তুমি ভালোবেসেছো
আত্মা নয়, মন নয়, রক্ত নয়,
আমার নুন নয়, আমার জল নয়,
আমার অন্য একটা কিছু, অশ্লীল কিছু।
হ্যাঁ, আমাকেও যেতে হবে তোমাকে ছেড়ে,
কেন না আমাকে অনেক বড় হতে হবে,
অনেক শিখতে হবে - অনেক কিছু করতে হবে।
তুমি বলেছিলে বাবা, পৃথিবীতে অনেক কিছু করতে হয়।
তোমরা দু’জনে মিলে ষড়যন্ত্র করে
আমার রক্তের প্রতিটা কণায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছো
কিছু একটা করার জন্যে - একে তোমরা প্রতিভা বলেছো -
আমি জানি না, এটা কি? কিন্তু এক অর্থহীন কিছু করা।
তাই আমারও সামনে লম্বা পথ।
তোমাকে ছেড়ে আমি চলে যাচ্ছি,
বাবা, চলে যাচ্ছি।
জানি, তুমি আর কিছু বলবে না,
এখন তোমার ইজিচেয়ারে
পাথরের মতো শুয়ে থাকবে,
তোমার চোখে পিঁচুটি জমবে,
তুমি আর কোনো কথা বলবে না -
আমি জানি, বাবা,
আমি জানি।...
যাই, রাত বাড়ছে,
রাস্তায় আমাকে নিয়ে কোনো এ্যাডভেঞ্চার হয়ে যেতে পারে।

যাই।...
চিঠি দেবো।...
ও, এখানে কোনো ডাকঘর নেই।

সুধা:
এখানে কোনোদিন কোনো ডাকঘর হবে না -
এখানে ডাকঘর নেই।

অমল:
কোনো ডাকঘর নেই।


...............................................................
জন্ম ১০ অক্টোবর, ১৯৪০ সালে, পশ্চিম বঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার দত্তপুকুর মহকুমার নিবাধুই গ্রামে। পড়াশোনার আনুষ্ঠানিক প্রথমপাঠ কোলকাতার হেয়ার স্কুলে, দশম শ্রেণী পর্যন্ত। দেশ ভাগ হয়ে গেলে ১৯৫৩ বা ’৫৪ সালে চলে আসেন বাংলাদেশে, যশোরে। মা আবেদা বেগম, বাবা ডা. আওলাদ হোসেন।

কোলকাতার স্কুল পাল্টে ভর্তি হন যশোর জেলা স্কুলে। এখান থেকে ম্যাট্রিকুলেশনের পর ইন্টারমিডিয়েট পড়েন মাইকেল মধুসূদন কলেজে। এরপর ভর্তি হন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে। এখানে তিন বছর পড়ার পর ভর্তি হন জগন্নাথ কলেজে বাংলা বিভাগে।

১৯৬৮ সালে রেডিও পাকিস্তান এ যোগ দেন, অনুষ্ঠান বিভাগে প্রযোজক হিসেবে। ১৯৭১এ মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যে দশ শব্দসৈনিকের হাতে, তিনি তাদের একজন। আঞ্চলিক পরিচালক হিসাবে অবসর নেন বাংলাদেশ বেতার থেকে।

৬ এপ্রিল, ২০০৬ সালে ফুসফুস ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করেন।


প্রকাশনা:

ক্ষুর (গল্পকবিতা), প্রথম প্রকাশ ২৬ মার্চ, ১৯৭৯, চৈত্র ১৩৮৫।
পরবাসে বসবাস (কাব্যনাটক), রচনাকাল: ১৯৭৯। প্রথম প্রকাশ: মে ১৯৮০
কোন ডাকঘর নেই (কবিতা), রচনাকাল: ১৯৭৯-৮১। প্রথম প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ১৯৮১
তুঁত (কবিতা), রচনাকাল: ১৯৭৯-১৯৮১। প্রথম প্রকাশ: অক্টোবর ১৯৮৩।
ভিন্নচোখে (প্রবন্ধ ও অনুবাদ), প্রথম প্রকাশ: ফেব্রুয়ারী, ১৯৮৫
রসাতল ও মরিয়ম (কবিতা), প্রথম প্রকাশ: একুশের বইমেলা ১৯৯৮, ফাল্গুন ১৪০৪।
কি করি কোথায় যাই (অপ্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ)

সম্পাদিত পত্রিকা:

সিদ্ধার্থ, সাহিত্য সংকলন : ৬ টি সংখ্যা (১৯৮৩ - ১৯৮৬)
কুঁড়েঘর, সাহিত্য সংকলন : ১৯৮২-৮৩

============================================
কোনো ডাকঘর নেই

গ্রন্থ: কোনো ডাকঘর নেই
রচনাকাল: ১৯৭৯-৮১। প্রথম প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ১৯৮১। প্রকাশক: ফরিদ নীরদ, সিদ্ধার্থ,২৮৫/এ, মগবাজার, ঢাকা-১৭। মুদ্রণ: বাংলা একাডেমী প্রেস। প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ : কাজী হাসান হাবিব। প্রচ্ছদ মুদ্রণ : পদ্মা প্রিন্টার্স এন্ড কালার লিমিটেড। পরিবেশনায় : জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, ৬৭/ক পুরানা পল্টন, ঢাকা-২। দাম: পনেরো টাকা। পৃষ্ঠা: ৬৮। স্বত্ব: নাজমা আনোয়ার। উৎসর্গ: মানুষের দুঃখজনক স্বাধীনতাকে।
============================================
তার আরো কবিতা পড়ুন:
http://www.facebook.com/note.php?created&&suggest¬e_id=87697768788

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন