মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

সরকার আমিনের কবিতা

ডাকাতি
.....
নিজ স্ত্রীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে গেলে
বহু ঐশ্বর্য রাই বৃথা যায়।
মন্দিরে দেবী দর্শনে গিয়েও লুকিয়ে রাখতে হয় চোখ
মানিব্যাগ নিয়ে সতর্ক থাকার মতো প্রযত্নে রাখতে হয় হৃদয়

বৃষ্টি মানেই মেঘের পরিণয়
আকাশকে আকাশ থাকতে হলে মাথা উঁচু করে রাখতে হয়।

হে আমার স্ত্রী
আমি অনুনয় করে বলছি -
ডাকাতি করো

তোমার ডাকের আশায়, ঘুমের পাশে বসে থাকি
তোমার ডাকাতির আশায়, পুলিশ স্টেশনে চাকরি করি।



বিড়ালের মন খারাপ
............
একটা বিড়ালের মন খারাপ দেখলে
আমার চোখে ঘুম আসে না
মন কেন তুমি এতো যন্ত্রণা করো?
খুব দুশ্চিন্তা হয়, কেন বিষণ্ন বিড়াল হাসে না।

আকাশের অসুস্থ তারাগুলোর জন্য কাঁদে প্রাণ
কেমন নিভু নিভু - রোগাটে
বৃষ্টির দিনে হৃদয় কেন এতো হাহাকার প্রবণ
আমি আর রাধা পড়ে গেছি এক সাথে বিরল জলের ফাঁদে !


অবশ্যই বলবো
..........
তুমি আমার কি লাগো অরণ্যের বৃষ্টি ?
আমার হৃদয় খারাপ, সময় খারাপ
তা বলে এসে একবারও ভিজিয়ে দেবে না ?
কাকের মতো ভিজতে ভিজতে কাঁপতে থাকলে
লোমকূপগুলোর ভেতর ঢুকে যাবে আরাধনা

মরতে মরতেও বেঁচে ওঠে বলবো প্রেম মন্দ কিছু নয়


সাবেক বিশ্বসুন্দরীর জেদ
..............
সাবেক বিশ্বসুন্দরী
পুরোনো দেহের ভারে নত।

তবু বেঁচে থাকতে সম্মত।

বসে করছেন শোক
বিষণ্ন লেকের পাড়ে।
পড়ে গেছে দাঁত, ভেঙে গেছে নখ
দুঃখ তাঁর অন্যতম শখ।

তাঁর জেদ দীর্ঘজীবী হোক।



হে গরু
.....
হে গরু, কোরবানির বিষণ্ন গরু, আমি তোমাকে জবাই করি
আমাকে জবাই করে দ্রব্যমূল্য
তোমার চামড়া খুব দামি এতে জুতা বানানো যায়
আমার চামড়ার দাম নাই
বড় মোটা
কোন কারণেই হৃদয়ে সুড়সুড়ি লাগে না।

বড় বড় চাকু দেখে তুমি কেঁদেছো
তোমার কালো চোখে আমি ভয় দেখেছি
আমি ভাই ভয়ের উর্ধ্বে
আমাকে ভয় পেতে নিষেধ করা আছে।

আমি হচ্ছি কারওয়ান বাজারের মরা ফাঙাস
আমি নই নাক উঁচু ইন্ডিয়ান পেঁয়াজ
বহুতল ভবনের তলে গালে হাত দিয়ে ভাবি
আমি যেন কোন বাজারে বিক্রি হতে চেয়েছিলাম?

হে গরু কি সুন্দর করে তোমাকে আমি জবাই করেছি
তোমার রক্ত মাটিতে পড়েছে
আমার রক্ত আমি গিলে ফেলেছি।

sarkeramin@yahoo.com

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন