মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০০৯

শিরোনামহীন

মোহাম্মদ রফিক


আগুনবলয় থেকে একটি কুণ্ড
ছুটে এসে
স্থির হয় মাঘীকুয়াশায়;
মোটেও আড়ষ্ট নয়, পরিত্রাহি
বিক্ষোভে সন্ত্রাসে
ছড়ায় বিষম শব্দ চতুর্দিকে;

তার জন্ম-পরিচয় জানতে চাইলে,
চন্দ্রবোড়া
ফণা তোলে একটুকরো ধোঁয়া;

যত ক্ষিপ্র ত্রিশুলের মাথা থেকে
জন্ম নেয়
একে-একে স্নেহ, প্রীতি, ভালোবাসা;

ছাইয়ে নয়, অঙ্গীকারে, টপ-টাপ
ঝরতে থাকে
দগ্ধ-চালা, ভাঙা-টিন, অস্থি-মজ্জা!


ভয় কি একদম উবে গেছে
মধ্যরাত্তিরের স্বপ্ন থেকে,

রমণের ঈষদুষ্ণ ইচ্ছা ঝাড়ে
দুটো বিষদাঁত,

মুণ্ডুহীন কায়াবৃত্ত বায়ুর অতল
ফুঁড়ে যেন বিন্দু-বিন্দু জল;

কোনো এক লবণ সাগর
তীরজুড়ে ছেড়ে যাওয়া,

কাঁকড়ার সার-সার খোসা
নড়ে ওঠে উত্তুরে হাওয়ায়,

মাঝে মাঝে ন্যাতানো রোদ্দুরে;
তারা কোনো খোপ থেকে,

ছাড়া পাওয়া ডাঁসা মুরগী নয়;
খোলা পেয়ে ঘরের দরজা

চৌকাঠ মাড়িয়ে এলেবেলে
কোলাহল, রক্তহিম শ্বাস!


শ্বাসের নিরুদ্ধ রক্তে
মাংস ছিঁড়ে তীব্র ঘুম,

একটি সূঁই, বল্লমের ফলা,
কপট মৃত্যুর কথাকলি,

দুটি যুদ্ধ, বোমারু বর্ষণ,
প্রতারক জন্মদাগ কাটা

এক-একটি সহজাত বুলি,
চোখের কোটরে মৃদু ছাইয়ে

ডুবে যাওয়া প্রত্যন্ত গোধূলি,
স্বর্ণজটা ভ্রম দিব্যকান্তি!


আদিনাদ, বিশ্বনাদ,
অনাদিনন্দন,

তেড়েফুঁড়ে তামাম বিলয়,
অবশেষে,

জাগাও, জাগিয়ে দাও,
মোহ্যমান

একটি ছায়া, কায়াহীন,
লুটায়, লুটিয়ে,

দুই কণা বালুমধ্যে
জনম মাতিয়ে,

এক ক্ষীর-সাগরের
গন্ধবহ মোহে!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন